আবাসনে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র, শিশু-সহ নিহত অন্তত ১৯

আবাসনে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র, শিশু-সহ নিহত অন্তত ১৯

আবাসনে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র, শিশু-সহ নিহত অন্তত ১৯
ফাইল ফটো

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: প্রাদেশিক বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর জানিয়েছে, একটিই ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়েছিল বাড়িটিতে। তাতেই সকলের মৃত্যু হয়েছে। রাতের অন্ধকারে একটানা হামলা চলছিল। গত কয়েক মাসে বোমার আওয়াজ এক রকম অভ্যেস হয়ে গিয়েছে মানুষগুলোর। মৃত্যুভয় নিয়েই গুটিসুটি মেরে শুয়েছিল তারা। আশঙ্কা সত্যি হল। ন’তলা বাড়িটিতে আছড়ে পড়ল ক্ষেপণাস্ত্র। গত কাল রাতের এই ঘটনায় অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে একটি শিশুও রয়েছে। দক্ষিণ ইউক্রেনের ওডেসার সেরিইভকা গ্রামের ঘটনা।

প্রাদেশিক বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর জানিয়েছে, একটিই ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়েছিল বাড়িটিতে। তাতেই সকলের মৃত্যু হয়েছে। সেরিইভকাতে একটি হলিডে হোমেও হামলা চালায় রাশিয়া। তাতে একটি শিশু-সহ দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। যথারীতি এ বারেও ক্রেমলিন সব দায় অস্বীকার করেছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্রদিমিত্রি পেসকোভ দাবিকরেছেন, তারা কোনও বসতি এলাকায় হামলা করেনি।

ইউক্রেনের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সেরিইভকার কিছু ছবি প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ন’তলা বাড়িটির ধ্বংসস্তূপের ভিতরে প্রাণের সন্ধান করছেন দমকলকর্মীরা। পাথরের চাঁই সরিয়ে দেখছেন, কেউ জীবিত চাপা পড়ে আছেন কি না। ব্যাগে করে দেহ বার করে আনার ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর জানিয়েছে, ৩৮ জন জখম হয়েছেন। এর মধ্যে ছ’টি শিশুও রয়েছে। ওডেসার প্রশাসনিক আধিকারিক মারিয়ানা মারতিনেনকো জানান, বাড়িটির বাইরের সমস্ত দেওয়াল ধসে পড়েছে। সামনে একটি দোকান ছিল। তাতে আগুন ধরে যায়। দমকলের সাহায্যে কোনও মতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ৬০ জন কর্মী ততক্ষণাৎ উদ্ধারকাজে নেমে পড়েন। বাড়িটিতে ১৫০ জন মতো বাসিন্দা ছিলেন বলে অনুমান করা হচ্ছে।

ওডেসা প্রশাসনের দাবি, এ পর্যন্ত অন্তত ২২টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে এ অঞ্চলে। মস্কোর মূল নজর পূর্ব ইউক্রেনে, কিন্তু সমুদ্র ঘেঁষা দক্ষিণেও তারা নাগাড়ে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধের শুরু থেকে ওডেসার দিকে নজর রয়েছে ক্রেমলিনের। মারিয়ুপোলের মতো ওডেসার ভৌগোলিক অবস্থানও কূটনৈতিক দিক থেকে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।

আজই অভিযোগ উঠেছে, ইউক্রেনের যে সব অঞ্চল দখল করেছে রাশিয়া, সেখান থেকে শস্যদানা জাহাজে করে অন্যত্র সরানো শুরু করেছে তারা। রুশ-সমর্থক এক আঞ্চলিক আধিকারিক জানিয়েছেন, বারডিয়ানস্ক বন্দর শহর থেকে ৭ হাজার টন শস্যদানা নিয়ে একটি জাহাজ ‘বন্ধু দেশগুলির’ উদ্দেশে রওনা হয়েছে। প্রতিটি জাহাজকে নজরবন্দি করা অসম্ভব, তবে শোনা যাচ্ছে চুরি যাওয়া ইউক্রেনীয় ফসল প্রথমে যাচ্ছে ক্রাইমিয়া। সেখান থেকে সেই সব পণ্য তোলা হচ্ছে রুশ জাহাজে। রাশিয়ার ফসলের সঙ্গে মিশিয়ে একসঙ্গে ছোট ছোট জাহাজে অন্যত্র পাঠানো হচ্ছে। যেমন সিরিয়া, তুরস্ক। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক নিজেরাই আজ জানিয়েছে, তারা লিসিচানস্ক শহরের তৈল শোধনাগারটি দখল করেছে।

আজ একটি চুক্তি সই হয়েছে। তাতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি, প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্মিহাল এবং পার্লামেন্টের মুখপাত্র রুসলান স্টেফানচুক একত্রে ঘোষণা করেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-এ যোগ দিতে ইচ্ছুক ইউক্রেন। জ়েলেনস্কি পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান, ইইউ-র স্থায়ী সদস্যপদ পেতে সমস্ত লক্ষ্যপূরণে যে ইউক্রেন তৈরি, এই যৌথ বিবৃতি তারই প্রমাণ।

মতিহার বার্তা / এ এম

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply